Arambagh Times
কাউকে ছাড়ে না

বন্ধুত্ব শব্দটির মধ্যে একটা অদ্ভুত বন্ধন আছে, যা দুটি মনকে এক সুতোয় বেঁধে বন্ধনে আবদ্ধ করে।
এই বন্ধুত্ব নিয়ে অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গই সর্বদা ইতিবাচক মত পোষণ করে থাকেন। এমনকি তাঁরা বলেন বন্ধুত্ব হলো এমনই; যে কথাগুলি আমরা পরিবারের সাথে শেয়ার করতে পারি না, যে কথাগুলি আমরা আমাদের লাইফ পার্টনারের সাথে শেয়ার করতে পারিনা, সেইগুলি বন্ধুদের সাথে নির্দ্বিধায় শেয়ার করতে পারি। একদম খাঁটি কথা, তবে এটা তখনই সম্ভব যখন সমমনা সম্পন্ন দুই ব্যক্তির মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। এই বন্ধুত্বের সম্পর্ককে খানিকটা আলাদা করে মূল্যায়ন করার জন্য, জাতিসংঘ ২০১১ সালের ২৭শে জুলাই জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ৩০শে জুলাই কে “বিশ্ব বন্ধু দিবস” হিসাবে নির্ধারণ করেন।

তবে অনেকেই মনে করেন এই বন্ধুত্ব দিবস পালনের রেওয়াজ অনেক আগে থেকেই ছিল। তৎকালীন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা, বিশৃঙ্খলা ও হিংস্রতা মানুষের মধ্যে অনেকটাই বন্ধুর অভাব তৈরি করেছিল বলে অনেকের অভিমত। ফলে রাষ্ট্রীয়ভাবে বন্ধু দিবস পালন করার ধারণা এসেছিল বলে অনেকে মনে করেন।

এক সূত্র অনুযায়ী, ১৯১৯ সালের আগস্টের প্রথম রোববারে বন্ধুরা নিজেদের মধ্যে কার্ড, ফুল, উপহার বিনিময় করেছিল। আবার জানা যায়, ১৯৩৫ সালে আমেরিকা সরকার এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছিল। দিনটি ছিল আগস্টের প্রথম শনিবার। তার প্রতিবাদে পরদিন ওই ব্যক্তির এক বন্ধু আত্মহত্যা করেন। এরপর থেকে জীবনের নানান ক্ষেত্রে বন্ধুদের অবদানের প্রতি সম্মান জানাতে আমেরিকান কংগ্রেসে ১৯৩৫ সালের আগস্ট মাসের প্রথম রোববারে বন্ধু দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। সেই থেকেই বন্ধুত্ব দিবস শীঘ্রই এটি খুব জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং আন্তর্জাতিক বন্ধুত্ব দিবসের রূপ লাভ করে।

বন্ধুত্ব দিবস বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন দিনে পালন করা হয়ে থাকে, তবে ভারতসহ বাংলাদেশ প্রভৃতি দেশে আগস্ট মাসের প্রথম রোববারই “বন্ধু দিবস” পালন করা হয়ে থাকে। বন্ধুত্ব সম্পর্কটা সত্যিই খুব মধুর ও ইতিবাচক, তবে আজকের একবিংশ শতাব্দীতে বন্ধুত্বের সংজ্ঞা টি অনেকটা পাল্টে গেছে যেন! দু-একটা ব্যতিক্রম ছাড়া বেশিরভাগ বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে স্বার্থের জন্য; স্বার্থ শেষ এমনি মুখ দেখাদেখিও বন্ধ। এই সমাজে পড়ে আছে কেবল, একটা প্রফেশনের মানুষের মনে অন্য আরেকটি প্রফেশনের মানুষের প্রতি আক্রোশ ও ক্ষোভ, সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে শুধু হিংসা, সর্বত্র অরাজকতা, একে অপরকে কাদা ছোড়াছুড়ি, সৌজন্যবোধের অভাব, দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ইত্যাদি যেগুলির প্রত্যেকটির সম্পর্ক বন্ধুত্বের সাথে ব্যতিক্রমী অর্থাৎ সরলরৈখিক নয়। তাই ২০২২ সালের “বন্ধুত্ব দিবস” পালন যেন প্রত্যেক মানব হৃদয়ে সুচিন্তন আনে এবং প্রত্যেকে এই নীতি শিক্ষায় নবরূপে অঙ্গীকারবদ্ধ করে যে, “সকলের তরে সকলে আমরা / প্রত্যেকে আমরা পরের তরে”।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published.