Arambagh Times
কাউকে ছাড়ে না

সেই বাঙালি জাতি আর আজকের বাঙালি জাতির মধ্যে বিস্তর ফারাক হয়ে গেছে। সেই বাঙালি জাতি সময়ের কাজ সময়ে করতে দায়বদ্ধ ছিল, বর্তমানে নিজের ভুল স্বীকার এবং সংশোধন দূরের কথা, উল্টে নিজেই নিজেকে “বাঙালি হয়েছি কিন্তু মানুষ হতে পারিনি” বলে দেঁতো হাসি হাসে, কিন্তু নিজেকে শুধরায়না।
এতো কথা এজন্য যে, আরামবাগে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল হয়েছে, পঠনপাঠন শুরু হয়ে গেছে। বলছে ডিসেম্বর থেকে চিকিৎসা পরিসেবা শুরু হয়ে যাবে। একই সঙ্গে আরামবাগ পৌরসভার কালিপুর ১২ নং ওয়ার্ডে একটি নার্সিং কলেজ নির্মানের কাজ শুরু হয়েছে। বাহ্যিক দৃষ্টিতে এগুলি সত্যিই আনন্দেরই বিষয়। কে না চায় এই রাজ্যের তথা এই আরামবাগের সাধারণ জনগণ সুচিকিৎসা পেয়ে সুস্থ হয়ে উঠুন! বাঁচতে কে না চায়। কেন মানুষগুলোকে কাতারে কাতারে করমন্ডল, ইস্ট কোচ, যশবন্তপুরম‌এই সব এক্সপ্রেস ট্রেনে দক্ষিনের দিকে ছুটতে হবে জ্বর সর্দি কাশি হলেও! সুস্থ হোক বা না হোক অন্তত চিকিৎসক ও চিকিৎসা পরিসেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের রুগীর প্রতি যে আন্তরীক, মানবিক ব্যবহার, তারও উচ্চ প্রশংসা রীতিমতো নিজেদের লজ্জিতই করে।
বেশি দূরে যাওয়ার কি দরকার, এই আরামবাগেই আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালের সংলগ্ন গড়ে উঠেছে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। মানুষের ধারণা ছিল সুপার স্পেশালিটি মানে সুপার সুপার চিকিৎসা পরিসেবা মিলবে এখানে। অচিরেই ধারনা বদলে গেছে। এখন এই সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালকে মানুষ ব্যাঙ্গ করে মৃত্যু স্পেশালিটি হাসপাতাল বলে থাকে। কারন, এখানে না আছেন নির্দিষ্ট সংখ্যক চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মী, না আছে সব ধরনের বিভাগ, না আছে, উপযুক্ত ওষুধ ও চিকিৎসা সংক্রান্ত যন্ত্রপাতি। এমনকি এক্সরে , প্যাথলজি পরিসেবাও অত্যন্ত নিম্নমানের বলে মানুষ তাগিদে পরীক্ষা করায় বটে তবে ঘটিবাটি বেচে হলেও বাইরে করাতে বাধ্য হয়ে থাকেন এই অভিযোগ আজও। সুপার স্পেশালিটি নামের সঙ্গে কাজের আকাশ পাতাল ফারাক। এবার আবার একই ছাদের নিচে আরও একটি সংযোজন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। এরপরও যদি দেখা যায় শুধু বড়ো বড়ো ইমরতই সার, ভেতর ফাঁপা! এই রাজ্যে নাকি যে কটি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল হয়েছে সব কটির সম্পর্কেই মানুষের একই রকম ধারনা, নামের ডাকে গগণ ফাটে, কাজের কাজ কিছুই নেই। এখন আবার নতুন করে মানুষ স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন আরামবাগ নিজেকে জেলা হিসেবে দেখতে চায় দীর্ঘ বছর ধরে, পায়নি, আরামবাগ নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে দেখতে চেয়েছিলো কিন্তু না, সে আশাতেও জল ঢালা হয়ে গেছে, এখন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল তো পাওয়া গেছে, এবার নিশ্চয়ই আর নিউরো, মেডিসিন, ব্রেন, কিডনি, হার্ট, অর্থ
ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের চিকিৎসার জন্য ভিন রাজ্যের দরজায় কড়া নাড়তে হবে না। এম আর আই পরিসেবা টুকুও মিলবে। শুধু “মা ক্যান্টিন” নিয়ে লাফানো বন্ধ হয়ে উপযুক্ত চিকিৎসা পরিসেবা মিলবে। সাধারণ মানুষজন এই রাজ্যের বাসিন্দা হিসেবে কি এটুকু স্বপ্ন পূরণের প্রত্যাশা করতে পারেন না?

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published.