আজ ১২ জানুয়ারি বিবেকানন্দের জন্মদিবস। আমাদের জাতীয় যুব দিবস। এক সর্বত্যাগী সন্ন্যাসী শুধুমাত্র নিজের কর্ম, চিন্তা ও বক্তব্য দিয়ে গোটা পৃথিবীতে ভারতীয় দর্শনের উপপাদ্য ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। তাঁর কর্মচাঞ্চল্য যেন সদা যুবক। তাই তাঁর বয়স হয়না! এক শতাব্দীর বেশি অতিক্রান্ত হয়েও আজও তিনি একই রকম প্রাসঙ্গিক। একই রকম যুবক।
আমাদের প্রত্যেকের আশেপাশে যত ক্লাব আছে একটু লক্ষ্য করলে দেখা যাবে তার মধ্যে অন্তত একটি হল বিবেকানন্দের নামাঙ্কিত। আসলে যুবকের কর্মচাঞ্চল্য সাথে নিয়ে নিজের ভবিষ্যৎবাণী সত্য করে চল্লিশ পার হওয়ার আগেই চলে গিয়ে তিনি চিরযুবক হয়ে আছেন। উনিশ শতকের বাংলা বিদ্যা-বুদ্ধির প্রতিমূর্তি দেখেছে বহু মনীষীর মধ্যে। কিন্তু ঔপনিবেশিক শাসনের জাঁতা কলে পড়ে দেশের প্রয়োজন ছিল এক সমুজ্জ্বল মনের। যা তরুণ সমাজকে ভবিষ্যৎ সোপানের বার্তা দেবে, তেজকে উদ্দীপ্ত করবে, প্রজ্ঞাকে সঞ্চারিত করবে।
আসলে তারুণ্য প্রশ্ন করে। সে ভালোবাসতে জানে উজাড় করে, তেমনই বেচাল দেখলে স্পর্ধিত হুংকারে কারন জানতে চায়। সত্যের, পরিত্রাতার ভেকধারী যে কোনও গোঁড়ামির বিরুদ্ধে যেমন গর্জে উঠেছিলেন এক তরুণ সন্ন্যাসী। ভারত ও ভারতীয়ত্বের প্রতি অপমানজনক কথা বলায় জাহাজের সহযাত্রী সাহেবকে কলার চেপে ধরে সাগরে ছুড়ে ফেলার হুমকি দেয়। ধর্মকে রান্না ঘরে ঢুকিয়ে জাত ধর্ম আর খাদ্য অখাদ্য বিচার করে আসা বকধার্মিকদের তিনি আঙ্গুল তুলে প্রশ্ন করেছিলেন। সমাজের রীতি নীতিতে চ্যালেঞ্জ করে প্রশ্ন করেছিলেন, যা তারুণ্যের ইঙ্গিত। তাঁর আগে এমন স্পষ্ট ভাষায় আর কোন সমাজসংস্কারক বা রাজনৈতিক নেতা সোচ্চার হয়েছেন! বরং পরবর্তীতে সকলে তাঁর কাছেই ভাব, বাণী, চিন্তা ধার করেছে, অনুপ্রাণিত হয়েছে।
