শ্রী রায়: পুলিশের কাজ নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা, অপরাধ দমন করা। কিন্তু না, পুলিশকে এখন জনসংযোগ করতে টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে হচ্ছে, রক্ত দান, স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবির এরকম নানান অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে হচ্ছে। পঞ্চায়েত সদস্য, পৌরসভার কাউন্সিলর থেকে শুরু করে নেতা, মন্ত্রী পাহারায় তো পুলিশের একটা বড়ো অংশই চলে যায়। প্রতি থানাতেই জনসংখ্যা অনুপাতে যে নির্দিষ্ট সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন থাকা প্রয়োজন তার থেকে অনেক কম। পদ শূন্য, কর্মী নিয়োগ বন্ধ। এর মধ্যে তৃনমূল জমানায় চালু হলো নামমাত্র ভাতায় সিভিক পুলিশ। কিন্তু ন্যায্য অধিকার আদায়ে এদের সংগঠন আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তেই সিভিকের গায়ে পুলিশ শব্দ তুলে দিয়ে ভলেন্টিয়ার করে দেয়া হলো। নামমাত্র মূল্যে গাধার মত খাটুনি। যেটুকু পাওয়া সেটুকুই টিকিয়ে রাখার লড়াই।
এদিকে রাজ্যে আর এক বিপদ। পিলপিল করে আদালতের নির্দেশে ভুয়ো শিক্ষকের ভুয়ো গ্রুপ ডি ও সি কর্কর্মীদের চাকরি বাতিল হয়ে যাচ্ছে। স্কুলে শিক্ষক সংখ্যা এমনিতেই কম ছিল, চাকরি বাতিল হয়ে যাওয়ার পর আরো খালি। এবার কি সেই ঘাটতি পূরণ করতে বাঁকুড়া জেলকে দিয়ে শুরু করে কচিকাঁচা ছাত্র ছাত্রীদের পড়ানোর কাজেও সিভিকদের ব্যবহার শুরু করে দেয়া হলো– প্রশ্ন উঠে গেছে। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার ও বেসরকারি সংস্থার যৌথ উদ্যোগে শুরু হতে চলেছে সিভিক ভলেন্টিয়ারদের দিয়ে গ্রামে গ্রামে ছোটো ছোটো ছেলে মেয়েদের পড়াশোনা শেখানো। সিভিকরা কাজের ফাঁকে তাদের সময় অনুযায়ী পড়াবেন। বাঁকুড়া পুলিশ সুপার বৈভব তেওয়ারির নাকি উদ্দ্যেশ্য জঙ্গলমহলে, আদিবাসী এলাকায় ও মুসলিম এলাকায় এই পড়ানোর কাজ শুরু করিয়ে এখানকার ছেলে মেয়েদের প্রথম সারিতে এগিয়ে আনা এবং উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা। এই লক্ষ্যেই তিনি এলাকার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও সিভিক ভলেন্টিয়ারদের কাজে লাগাতে চলেছেন।
প্রশ্ন উঠেছে, এই ভাবনার জন্য সরকারের শিক্ষা দপ্তর আছে। এরপরও পুলিশ সুপারকে কেন এই উদ্যোগ নিতে হবে? নাকি এভাবেই শিক্ষা ব্যবস্থাটাতেও সিভিক পদ্ধতির অনুপ্রবেশ ঘটানো হবে। একদিকে চাকরি বাতিল হয়ে যাওয়ার জন্য অনেক শূন্য পদ সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মী নিয়োগ বন্ধ থাকলে টাকাও বেঁচে গেল সরকারের। বাঁকুড়া জেলা দিয়ে শুরু করে ধীরে ধীরে অন্যান্য জেলার মধ্যেও এই সিস্টেম ছড়িয়ে দেয়া হবে! আবার নতুন করে সন্তানদের ভবিষ্যত চিন্তা করে আতঙ্কে সাধারণ অভিভাবকরা
