নিজস্ব সংবাদদাতা: গত ২০ এপ্রিল সন্ধ্যা প্রায় ছটা নাগাদ গোপন সূত্রে বিহারের কিষানগঞ্জ থানায় খবর আসে বিহারের রাস্তা দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের দিকে একটি কালো রঙের ফোর্ড কোম্পানির বিলাশবহুল লাভজারি গাড়িতে করে স্মাগলিং করা জিনিষ লুকিয়ে আনা হচ্ছে। সূত্র মোতাবেক ২১ এপ্রিল ফোরিং গোড়া চেক পোস্ট এ সন্ধ্যা ৬-৪৫ নাগাদ নাকা চেকিং এর সময় সূত্র অনুযায়ী যথারীতি কালো রঙের ফোর্ড কোম্পানির বিলাশবহুল লাভজারি গাড়িতে চেকিং করতে গিয়ে দেখা যায় প্রচুর পরিমাণে ভারতীয় ও বিদেশী মুদ্রা এবং লুকিয়ে রাখা অবস্থায় দুটি মদের বোতল ইত্যাদি সন্দেহজনক জিনিস আছে।কিষানগঞ্জ পুলিশ গাড়ি সমেত গাড়িতে থাকা সকলকেই থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যান। গাড়িতে ছিলেন সৈয়দ জিয়াজুর রহমান, যিনি আরামবাগ ২ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা এবং আরামবাগ হোটেল এন্ড রিসর্ট,মল গ্রুপ,এল এফ এস ব্রোকিং সহ বহু প্রাইভেট কোম্পানীর মালিক এবং রীতিমতো প্রভাবশালী বলে পরিচিত। এই রাজ্যের শাসকদলের বহু হেভিওয়েট নেতা মন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর ওঠাবসা। বিলাশবহুল জীবনযাপন। তাঁকে এবং তাঁর ছায়া সঙ্গী যথাক্রমে সৌরভ অধিকারী, অভিজিৎ পাল, অভিজিৎ আইচ, রাজা জানা, প্রসেনজিৎ মল্লিককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। তল্লাশি চালিয়ে তাদের কাছ থেকে ভারতীয় মুদ্রায় ৩৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা, বিদেশি মুদ্রায় ভুটানের ১৬,৩০০ নগলট্রম এবং আরবের ১৬,৮৬০ দিরহাম, দুটি ৬৫০ এম এল এবং ৭৫০ এম এল ডিলাক্স ব্লেন্ডেড স্কচ হুইস্কি, আরবের রেসিডেনসিয়াল আই কার্ড,দুটি প্রাইওরিটি কার্ড , বেশ কিছু এ টি এম কার্ড, এপেল আই ফোন, সহ অনেকগুলো দামি মোবাইল ইত্যাদি পাওয়া যায়। বিহারে মদ উৎপাদন, পরিবহন নিষিদ্ধ। তাই ২০১৬(১৮)র ধারা ৩০(এ)/৩২/৪১/৪৭ আরোপ করা হয় , এছাড়াও অতিরিক্ত পরিমাণে ভারতীয় ও বিদেশী মুদ্রা সহ বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে সন্তুষ্ট না হওয়ায় একই সঙ্গে ভারতীয় দন্ডবিধি অনুসারে ৪১৯/৪২০ ধারায় সৈয়দ জিয়াজুর রহমান সমেত সঙ্গে থাকা সকলকেই গ্রেফতার করা হয়,কেস নং ৯২৮/২৩ তারিখ ২১ এপ্রিল ২০২৩। বিপুল অঙ্কের বিদেশি মুদ্রায় ও ভারতীয় মুদ্রার তদন্তে কিষানগঞ্জ থানাধ্যক্ষ এস আই সুমন কুমার সিং ও অন্যান্য পুলিশ এবং ইনকামট্যাক্স অফিসার শিব প্রিয় উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে। বিদেশি মুদ্রা সংক্রান্ত বিষয়ের উপর জিজ্ঞাসাবাদের সময় সৈয়দ জিয়াজুর রহমান বলেন তাঁর দুবাই এ বাড়ি ও ব্যবসা আছে, গোল্ডেন ভিসা আছে, তাই তাঁকে প্রায়সই ভারত থেকে দুবাইয়ে যাতায়াত করতে হয়। তিনি এই সমস্ত টাকা কলকাতায় নিয়ে গিয়ে ব্যাঙ্কে জমা দিতেন। কিন্তু তাতে তদন্তকারীরা সন্তুষ্ট হতে পারেননি। গ্রেফতার করেন সৈয়দ জিয়াজুর রহমান সমেত সঙ্গে থাকা সকলকেই।