মনোরঞ্জন সাঁতরা : বিশ্ব চিরাচরিত যে শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে পরিচিত ছিল এবং অর্থনৈতিকভাবে পৃথিবী বিগত দশকগুলোতে যে অগ্রগতির ধারায় এগুচ্ছিল, কোভিড-১৯-এর কারণে ব্যাপকভাবে তার নেতিবাচক পরিবর্তন ঘটে। দীর্ঘকালের ধারাবাহিকতায় শিক্ষা ব্যবস্থার ধরন ও স্বরূপ বিভিন্নভাবে পরিবর্তিত হয়েছে এবং ক্রমশ তার আধুনিকায়ন ঘটেছে।
কিন্তু কোভিড-১৯-এর কারণে যে পরিবর্তন ঘটেছে তাতে নতুন প্রজন্মের আগামীর স্বপ্নসৌধ নির্মাণের মূলকেন্দ্র শিক্ষা ব্যবস্থা প্রায় সম্পূর্ণভাবে বিঘ্নিত হয়েছে। করোনার কারণে দীর্ঘদিন স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় মোট শিক্ষার্থীর ৯৪ ভাগ কোনো-না-কোনোভাবে ক্ষতির শিকার হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের ৯৯ ভাগই নিম্ন বা নিম্নমধ্য আয়ের দেশের শিক্ষার্থী। বর্তমান পৃথিবী এমন এক বিপর্যয়ের শিকার, যার প্রভাব প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে পড়বে, মানবজাতির অন্তর্গত যে সম্ভাবনা রয়েছে তা ধ্বংস হয়ে যেতে পারে, বিগত দশকগুলোর উন্নতির যে ধারা তা বাধাগ্রস্ত হবে। শিক্ষাগ্রহণ প্রক্রিয়ায় দীর্ঘ সময় ব্যাঘাতের কারণে শিশুদের পুষ্টিহীনতা, বাল্যবিয়ে ও নারীর প্রতি সহিংসতা বৃদ্ধি পাওয়ার ব্যাপক আশংকা রয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, করোনার কারণে প্রায় ১ কোটি আর কখনো স্কুলে ফিরবে না। প্রায় ১২ কোটি বাচ্চার পরিবার দারিদ্র্যের শিকার হবে। বিশেষ করে পাকিস্তান, আফগানিস্তান, নাইজার, নাইজেরিয়া, সেনেগাল, আইভরি কোস্ট, ইয়েমেন, গিনি, মরিটেনিয়া, লাইবেরিয়া ও চাদ- এসব দেশের শিক্ষার অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। গত এপ্রিলে ১৬০ কোটি তরুণ-তরুণী স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাজীবন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। শতকরা হিসাবে যা ৯০ শতাংশ। এছাড়া নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর শিক্ষার অবস্থাও ভালো নয়।
